বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে আপনি এমন লোকেদের দেখতে পাবেন যারা একই সাথে একই পদে নিয়োগ পান, তবুও তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি নেতৃত্ব দেন, অন্যরা পিছিয়ে থাকেন। এই নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিরা তাদের আশ্চর্যজনক কাজ করার ক্ষমতা এবং তাদের নম্র আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় স্থান অর্জন করেন।
এই বিষয়ে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা বলেন,
"মাইক্রোসফটে যোগ দিয়েছি ১৯৯২ সালে। সব সময় ভেবেছি, আমি একটা দারূণ কাজ করছি, হতে পারে এটাই আমার শেষ কর্মস্থল, প্রতিদিন একই রকম কৌতূহল, শক্তি, শেখার আগ্রহ নিয়ে দিন শুরু করার মানসিকতা সম্ভবত আমার সহজাত মানুষ যখন উপদেশ চায়, সবসময় বলি তোমার সেরাটা দেওয়ার জন্য পরের চাকরির জন্য অপেক্ষা করো না, এখন যা করছ, সেখানেই সেরাটা দাও।"
সৃজনশীল চিন্তা করুনঃ
কোনো প্রতিষ্ঠানকে আপনার সঠিক মূল্য বুঝানোর সবচেয়ে বড় উপায় হলো কিছু সৃজনশীল,মৌলিক ধারণা বা আইডিয়া দেওয়া যা প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে অবদান রাখে। প্রতিষ্ঠানকে নতুন এবং সৃষ্টিশীল আইডিয়া দিন যেটা সম্পর্কে পূর্বে কখনো আলোচনাও হয়নি এবং যেটা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রকল্প সম্পর্কে আপনার মতামত প্রকাশ করতে দ্বিধা করবেন না।কোনো বিষয়ে আপনার মতবিরোধ থাকতেই পারে, তবে আপনি সেটিকে সঠিক পদ্ধতিতে উপস্থাপন করবেন।
নতুন দক্ষতা শেখার চেষ্টা করুনঃ
একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মীগণ সর্বদা
তাদের কাজের ক্ষেত্রে শীর্ষে থাকতে নতুন নতুন স্কিল শিখে রাখে। যেটা তাদেরকে পরিণত কর্মীতে রুপান্তর করে । নতুন দক্ষতা
শিখতে তাদের আগ্রহ আছে কারণ তারা জানে যে সেরা বিনিয়োগ হচ্ছে নিজের দক্ষতা বাড়ানো।
সুতরাং, প্রতিষ্ঠানের কাছে নিজেকে
একটি মূল্যবান সম্পদ রুপে তুলে ধরার জন্য জন্য, আপনাকে কখনই নতুন স্কিল শেখা থেকে
বিরত থাকা উচিত নয়।এমন অনেক নতুন দক্ষতা রয়েছে যা আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে সহায়তা
করবে, যেমন হতে পারে নতুন প্রোগ্রামিং ভাষা, বা হতে পারে একটি নতুন প্রযুক্তি শেখা।
কোনো নতুন দক্ষতা শেখার জন্য কিছু অর্থ ব্যয় করতে কখনও দ্বিধা করবেন না। এটি এমন একটি
বিনিয়োগ যা আপনার ক্যারিয়ারে অদূর ভবিষ্যতে এটির ফল পাবেন।
অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও বিনয়ী
হওয়াঃ
কাজে প্রতিযোগিতামূলক হওয়া এবং লক্ষ্য
পূরণের উদ্দেশ্যে কাজ করা খুব ভালো তবে আপনার মধ্যে যদি অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা,
সহানুভূতিশীলতা এবং মানবিক গুণাবলীর ঘাটতি থাকে - তবে আপনার অন্যসব ভালো কাজের গুরুত্ব
থাকে না।
কোনো কোম্পানির একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার
অফিসের সব থেকে ছোট পদে কাজ করা কর্মী প্রতি শ্রদ্ধা ও সৌজন্য দেখানো তার চরিত্রের
কথা বলে। ভালো ব্যবহার শুধুমাত্র আপনাকে ভালো কর্মী হিসেবে প্রতিষ্টিত করেই না, বরং একজন ব্যক্তি
হিসেবেও আপনাকে অন্যের কাছে পছন্দনীয় করে তোলে। সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিগণ সবসময় অন্যের
প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বিনয়ী হয়।
অন্যকে সাহায্য করুনঃ
আপনি নিজেকে প্রতিষ্ঠানের সম্পদ হিসেবে
দেখানোর জন্য আপনার সহকর্মীদের প্রতি অবহেলা
করবেন না। তাদের প্রতিও সহনশীল হওয়া ব্যঞ্জনীয়। কখনও কখনও, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সাফল্য
প্রকৃত বিজয় হিসেবে গন্য হয় না । নিজের কাজের সাফলাতার পাশাপাশি আপনার সহায়তায় যদি অন্যরাও সফল হয় সেটা আপনাকে আরো যোগ্য হিসেবে
প্রতিষ্ঠিত করবে এবং আত্মতুষ্টি দিবে।
সফল কর্মীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণ
হলো তারা টিম প্লেয়ার হিসেবে কাজ করেন। অন্যকে সাহায্য করার জন্য তারা কখনো ভয় পান না।অন্যকে সাহায্য করার মাধ্যমে আপনি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন
যা কর্মক্ষেত্রে আপনার সাফল্যের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয়।
অন্যের মতামতকে সম্মান করুনঃ
আমরা সকলেই আমাদের নিজ নিজ ক্যারিয়ারে
কমপক্ষে এক দুবার ভুল করে থাকি। এটি সম্পূর্ণরূপে ঠিক আছে এবং ভুল করা গ্রহণযোগ্য।
সামগ্রিকভাবে, আমরা ভুল থেকে সঠিক কাজগুলি করতে শিখি।কেউ যদি আপনার কোনো কাজ পছন্দ না করেন, তাহলে তার মতামতকে গুরুত্ব দিন যদি আপনার কোনো বিষয়ে ঘটতি থাকে সেটি দ্রুত শুধরে নিন।
সফল কর্মীরা তাদের ভুলগুলি থেকে শিখেন
এবং সবসময় গঠনমূলক মতামত গ্রহন করে থাকেন। তারা এটিকে ব্যক্তিগতভাবে কখনই নেন না,
বরং তারা এটিকে নিজেদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করেন।
কথা নয়, কাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত
করুনঃ
সফল কর্মীরা নিঃশব্দে কঠোর পরিশ্রম করে এবং তাদের সাফল্যই তাদের পক্ষে কথা বলে। তারা কখনো নিজের যোগ্যতার কথা প্রচার করেন না , তাদের কাজের দক্ষতা তাদেরকে অন্যের কাছে গ্রহনযোগ্য করে তোলে। তারা অন্যদের সাথে ইদুর দৌড়ে সামিল করেন না এবং নিজের ফলাফল অন্যের সাথে তুলনা করেন না। তারা নিজেকে পূর্বের স্থান থেকে কতোটুকু উন্নতি করতে পারলেন সেটার উপর গুরুত্ব দেন।
প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পারফর্ম
করুনঃ
এটি সম্ভবত এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা সাধারন
কর্মীর মধ্য থেকে সেরা কর্মীকে স্পষ্টভাবে আলাদা করে দেয়। প্রতিষ্ঠানের একটি সম্পদ
হওয়ার জন্য সর্বদা আপনাকে প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পারফর্ম করতে হবে। আন্ডারপ্রোমাইজ
এবং ওভারডেলিভার। সর্বদা যে অতিরিক্ত মাইল যেতে হবে।
(আপনি যদি নিজেকে নিজের প্রতিষ্ঠানের গ্রহনযোগ্য এবং মূল্যবান সম্পদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে আগ্রহী হন, তবে আমি নিশ্চিত যে উপরে বর্ণিত পরামর্গুশলি আপনার পক্ষে সহায়ক হবে।)







