আমরা ১ম পর্বে জেনেছি একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে মনযোগ স্থির
করার মাধ্যমে কীভাবে কাজে মনসংযোগ বাড়াতে পারি। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে মনযোগ স্থির
করার উপায়
সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছিল। আমরা সময়ের সুষম বন্টনের মাধ্যমে কঠিন ও চ্যলেঞ্জিং কাজগুলো
সহজে করতে পারবো । আমরা জানি সময় এবং নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা না । আর সেই সময়কে
সুষম বন্টনের মাধ্যমে আমাদের কাজের প্রতি মনযোগ বাড়াতে পারি। আজ আমরা জানবো সময়ের সুষ্ঠু
বন্টনের মাধ্যমে কিভাবে কাজে মন সংযোগ বাড়াতে পারি।
১. চ্যালেঞ্জিং কাজ দিয়ে দিন শুরু করুনঃ
কার্যদিবসের শুরুতে আমরা মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী থাকি, সুতরাং অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রমের কাজগুলো দিয়ে দিন শুরু করুন ।দিনের
শুরুতেই নতুন বা সৃজনশীল কাজ করতে পারেন । সৃজনশীল কাজগুলোতে আপনার উচ্চমাত্রার মনসংযোগ
করার প্রয়োজন হয়। দিনের শুরুতে আমাদের যেকোনো বিষয়ে মনঃসংযোগ করা সহজ হয়। যখন দেখবেন
আপনি জটিল কাজ করে হাঁপিয়ে যাচ্ছেন তখন আপনার দিনের বেসিক কাজ করতে থাকুন। দিনের
শেষ ভাগে জটিল কাজ করা এড়িয়ে চলুন।সুন্দর ভাবে দিনের কাজগুলো শেষ করুন পরবর্তি
দিন ঝাঁপিয়ে পড়ুন নতুন উদ্দমে ।
২. এক সময়ে শুধু একটি কাজেই ফোকাস করুনঃ
মাল্টিটাস্কিং, বা একটি কাজ থেকে অন্যকাজে
মনোনিবেশ করা এবং একবারে অনেকগুলি কাজ করার চেষ্টা করা, এতে আপনার কাজ করার শক্তি দ্রুত কমতে শুরু করবে । একাধিক কাজ এক সময়ে কারার পরিবর্তে, একটি নির্দিষ্ট
কাজ বেছে নিন এবং এটি সমাপ্তিতে মনোনিবেশ করুন। এই কাজটিকে নিখুঁত করে তুলুন। কেবল
এটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করুন এবং কাজটি শেষ হলে পরে অন্যকাজে হাত দিন। এরফলে আপনার কাজে ভুল কম হবে এবং
মানসিক প্রশান্তি বাড়বে। এছাড়াও আপনার যদি একটি বড় কাজে মনোযোগের প্রয়োজন হয় তবে
সেই কাজটি কীভাবে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করা যেতে
পারে তা নিয়ে পরিকল্পনা করুন। তারপরে, প্রথমে কোন কাজগুলি সম্পন্ন করতে হবে তার সিদ্ধান্ত
নিন এবং কাজ শুরু করুন।
৩. কাজের সেরা সময় নির্বাচন করুনঃ
প্রত্যেক ব্যক্তির পুরো দিনের মধ্য
কয়েক ঘন্টা থাকে যার মধ্যে তারা সাধারণত সর্বোত্তমভাবে কাজ করে। এক সপ্তাহের জন্য,
এমন একটি চার্ট রাখুন যেখানে আপনি প্রতি ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ শক্তির স্তরটি লিখে রাখেন।
তারপরে, আপনার শক্তি এবং উত্পাদনশীলতার শীর্ষগুলি কোথায় রয়েছে তা দেখতে তালিকাতে
চোখ বুলিয়ে নিন । ভবিষ্যতে, এই নির্দিষ্ট ঘন্টাগুলি আপনার সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজে
ব্যয় করুন ।উদাহরণস্বরূপ, অনেক লোক দেখতে পান যে তারা সকাল ৯ টা থেকে ১১ টার মধ্যে
সবচেয়ে ভাল কাজ করে এবং দুপুরে খাওয়ার পরে তাদের কাজের গতি ধীরে হতে থাকে। দুপুরে খাওয়ার পরে কম পরিশ্রমের
কাজগুলো শুরু করুন এবং পরবর্তি দিন সকালে আরও কঠোর পরিশ্রম শুরু করুন।আপনার সহকর্মীদের
জন্য এটি পরিষ্কার করুন যে আপনি জরুরি না হলে আপনার কাজের সর্বোত্তম সময়ের মধ্যে আপনাকে
যাতে বিরক্ত না করে।
৪. নিজস্ব সময়সীমা সেট করুন:
সম্ভবত আপনার বস বা নিয়োগকর্তা যখন আপনাকে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট
দিবেন তখন সেটা সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সময় দিবে্ন। তবে, বিলম্ব
এড়াতে এবং কাজে মনোনিবেশ বাড়াতে প্রতিটি কাজের জন্য আপনার নিজস্ব সময়সীমা তৈরি করুন।
এটি অনুসরন করলে প্রতিটি কাজ শেষ করার জন্য
যথেষ্ট সময় পাবেন। আপনি যদি বেঁধে সময়ের আগেই কোনো নির্দিষ্ট কাজ শেষ করতে
পারেন তাহলে অপেক্ষাকৃত জটিল কাজগুলো শেষ করার জন্য যথেষ্ট সময় পাবেন।
উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি রবিবারে অফিসে উপস্থিত হওয়ার পরে আপনার বস আপনাকে একটি কাজ দিলেন এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে কাজটি
শেষ করার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দিলেন, এরপর আপনি কাজটিকে ৩ ভাগে ভাগ করে নিলেন
।আপনি সোমবার প্রকল্পের ১ম ভাগের কাজ করলেন, মঙ্গলবার ২য় ভাগ এবং বুধবার শেষ অংশের
কাজ করার করতে ব্যক্তিগত সময়সীমা নির্ধারণ করতে পারেন, তারপরে প্রুফরিড এবং সংশোধন
করতে বৃহস্পতিবারটি ব্যবহার করুন।
চলবে............
লেখকঃ মোঃ আশরাফুল মাখলুকাত
অ্যাসিস্টেন্ট এক্সিকিউটিভ, এএইচআর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ইমেইলঃ ashrafulcuhrm@gmail.com
(এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত সব ছবিই সংগৃহীত ও
প্রতিকী অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে)
অ্যাসিস্টেন্ট এক্সিকিউটিভ, এএইচআর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ইমেইলঃ ashrafulcuhrm@gmail.com
(এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত সব ছবিই সংগৃহীত ও প্রতিকী অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে)










