শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০

হার্ড ওয়ার্ক নয়, স্মার্ট ওয়ার্ক করুন !!!

 

কঠোর পরিশ্রম করা স্বত্বেও আমরা অনেকেই সফলতার স্বাদ নিতে পারছি না । আমরা অনেকেই চিন্তা করি কিভাবে আমরা জীবনে সফল হবো। কোনো কাজই ছোট না । সকল পেশার  মানুষের প্রতি সন্মান রেখেই বলছি ধরুন একজন রিকশাওয়ালা কঠোর পরিশ্রম করার পরেও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে্ন, অন্যদিকে একজন ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসে ডলার আয় করছেন। আসলে দুইটা সম্পূর্ন আলাদা পেশা এবং আলাদা কর্ম দক্ষতার দুইজন ব্যক্তি কিন্তু বিষয়টি বোঝানোর  উদ্দেশ্যেই কথাগুলো বলা। একটি স্মার্ট ওয়ার্ক অন্যটি হার্ড ওয়ার্ক।

 স্মার্ট ওয়ার্ক সম্পর্কে  বিখ্যাত গ্রন্থ "দ্যা গ্রেট পার্ল অব  উইজডম" এর লেখক  বঙ্গম্বী হবিয়ারীমন বলেন,

"সর্বাধিক সফল ব্যক্তিরা স্মার্ট কাজ করে, হার্ড ওয়ার্ক নয়"




আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলো যদি সঠিক পরিকল্পনা এবং পূর্ব পরিকল্পনার মাধ্যমে করতে পারি তাহলে সাফল্য আসতে বাধ্য। শুধুমাত্র কঠোর পরিশ্রম দিয়ে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব নয়, এর পাশাপাশি আপনাকে কাজটি স্মার্ট ধারনা থাকতে।

দিন শুরু করুন রুটিন মেনে

প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ঠ রুটিন নিয়ে আপনার সকাল শুরু করার চেষ্টা করুন। আপনার ডেস্কে বসার আগে কিছুটা সময় আপনার কাজের ক্ষেত্রটি ঘুরে দেখে নিতে পারেন বা পেশাদার মনোভাব বিকাশের জন্য ভালো কোনো বইয়ের কিছুটা পংক্তি পড়ে আপনার দিন শুরু করতে পারেন। দিনের শুরুতে কিছুটা মেডিটেশন করে নিতে পারেন যাতে আপনার কাজে মনোযোগ বাড়ানোর সাথে সাথে কাজের চাপ নিতে এবং কঠিন সময়ে মেজাজ ধরে রাখতে সাহায্য করেবে। প্রতিটি দিন শুরু হোক রুটিন মাফিক স্মার্টভাবে।

আপনার কার্য তালিকা সংক্ষিপ্ত রাখুন

আপনার দিনের কাজের তালিকাটি সংক্ষিপ্ত রাখুন। দিনের জন্য  নির্দিষ্ট তিন থেকে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং কার্যগুলিতে মনোনিবেশ করুন। আপনার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আপনার মধ্যে উদ্দমী মনোভাব কাজ করবে। এরপর কম গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলিতে মনোনিবেশ করুন।

দিনটি শেষ হোক রুটিন মেনেই

দিনের শুরুতে যেমন পরিকল্পনা করে কাজ শুরু করেছিলেন ঠিক সেইভাবেই দিন শেষ করার পরিকল্পনা করে রাখতে পারেন। দিন শেষে ঠিক করুন পরবর্তি দিন যে সকল গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবেন। অফিস থেকে বের হওয়ার আগেই অবশ্যই নিজের ডেক্স গুছিয়ে বের হবেন যাতে পরবর্তি দিন কোনো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস খুঁজে বের করতে বেশি সময় নষ্ট না হয়।

 সকল প্রকার অ্যালার্ম বা অ্যলার্ট বন্ধ রাখুন

আপনার কাজের উপর ফোকাস করার প্রয়োজন হলে আপনার মোবাইল অ্যালর্ম বা ক্যালেন্ডার অ্যালার্ট বন্ধ রাখুন। এরফলে আপনার দিনটির অপ্রত্যাশিত বিঘ্ন থেকে মুক্ত রাখবে এবং আপনার কাজটি সম্পাদনের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন।

দ্রুত রেস্পন্স করুন

প্রতিটি কাজের দ্রুত রেস্পন্স করার অভ্যাস গড়ে তুলুন, যদি কোনো কাজ আপনাকে দিয়ে করা অসম্ভব হয় সেটিও ইতিবাচক ভাবে জানিয়ে দিন। আপনার কাছে যদি মেইল আসে যেটির জবাব প্রয়োজন, অবিলম্বে সেটির জবাব দিন। যদি আপনার কাছে সঠিক জবাব না থাকে তাহলে সময় চেয়ে নিন এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে আপনার ফিডব্যক জানান। এটি শুধুমাত্র মেইলের ক্ষেত্রে না, দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রেও যেকোনো বিষয়ে দ্রুত রেস্পন্স করুন।  

শেষ হওয়া কাজের তালিকা রাখুন

একটি দিনের মধ্যে আপনি যে কাজগুলো শেষ করছেন তার একটি চলমান তালিকা রাখুন। এটি আপনাকে অনুপ্রেরণা এবং সাফল্য বোধ করতে সহায়তা করবে। এই তালিকাটি ভবিষ্যতে অনুরূপ কাজ করার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা হিসেবে  সাহায্য করবে।চ

যোগাযো দক্ষতা বৃদ্ধি করুন

 যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধিতে অগ্রাধিকার দিন। আপনি যখন নিজের কাজ করছেন পাশাপাশি আপনার সহকর্মী বা আপনার বস আপনাকে বিভিন্ন রকম নির্দেশনা দিতে পারেন, সেক্ষেত্রে নিজের কাজের পাশাপাশি অন্যদের প্রশ্নের সঠিক জবাব দিন । দৈনন্দিন কাজের ক্ষেত্রে আমরা যখন সহকর্মীদের মেইল করে থাকি তখন মেইলের ভাষা সংক্ষিপ্ত রাখার পাশাপাশি মুল বক্তব্য তুলে ধরুন।

ফলাফল নির্ভর মিটিং করুন

প্রতিষ্ঠানের কাজের ক্ষেত্রে মিটিং প্রায়শই প্রয়োজনীয় হয়ে উঠে এবং প্রতিটি মিটিংই নির্দিষ্ঠ কিছু পরিকল্পনা নিয়েই হয়ে থাকে।মিটিং করার পূর্বেই মিটিংয়ের এজেন্ডা তৈরী করুন। মিটিংয়ের এজেন্ডা অবশ্যই ফলাফল নির্ভর হতে হবে। মিটিংটিকে যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত এবং ফলাফল নির্ভর। মিটিং কখনো দীর্ঘ সময় বা সল্প সময়ের জন্য করা ঠিক নয় । মিটিং-এর একটি নির্দিষ্ট মাত্রার সময় থাকতে হবে যেমন দেড় ঘন্টা থকে দুই ঘন্টা। আপনি যদি দীর্ঘ সময় মিটিং-এ ব্যয় করেন তাহলে আপনার  দৈনন্দিন কাজে প্রভাব পড়বে। মিটিং শেষে অবশ্যই মিটিং-এ আলোচিত বিষয় এবং সিদ্ধান্তগুলো মিটিং মিনিটসের মাধ্যমে সভায় উপস্থিত ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছিয়ে দিন। যার ফলে পর্বতিতে সভার প্রতিটি বিষয় ফলো-আপ করতে সুবিধা হবে।

দেড় ঘন্টা থেকে দুই ঘন্টার ব্লকে কাজ করুন

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে আমাদের মস্তিষ্ক একবার ৯০ মিনিটের জন্য ফোকাস ধরে রাখতে সক্ষম। আপনার দিনটিকে দেড় ঘন্টা বা দুই ঘন্টার তিন থেকে চার অংশে ভাগ করার বিষয়ে বিবেচনা করুন। এটি আপনাকে আপনার সামগ্রিক উত্পাদনশীলতাকে ফোকাস করতে এবং আপনার মস্তিষ্কের প্রাকৃতিক ক্ষমতা সর্বাধিক করে তুলতে সহায়তা করবে। এছাড়াও, নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি আপনার বিরতির সময়সূচী মেনে চলেছেন এবং আপনার ৯০ মিনিটের কাজের সময়কালে আপনার কাজের প্রতি মনোনিবেশিত থাকুন। এই কাজের সময় নিশ্চিত করুন যাতে আপনার ফোন বা মেইল আপনার কাজের ক্ষেত্রে যাতে প্রভাব না ফেলে।

একটি কাজে মনোনিবেশ করুন

বেশকিছু গবেষনা দেখিয়েছে যে আপনি যখন একটি কাজ থেকে অন্য কাজে চলে যান তখন আপনি আসলে সময় নষ্ট করেন কারণ আপনার মস্তিষ্কের কার্যগুলি স্যুইচ করতে এবং এর ফোকাস পরিবর্তন করতে সময় লাগে। মাল্টি-টাস্কের আবেগকে প্রতিহত করুন, এর পরিবর্তে আপনার সমস্ত মনোযোগ একটি কাজের দিকে নিয়োজিত করুন। প্রথম কাজটি শেষ করেই পরবর্তি কাজে ফোকাস করুন।

 সংক্ষিপ্ত সময়সীমা সেট করুন

আপনার কাজের জন্য সর্বদা যুক্তিসঙ্গত সময়সীমা নির্ধারণ করা উচিত, একটি কাজকে সমাপ্ত করার জন্য প্রথমে কাজটি কয়কটি ভাগে ভাগ করুন এবং প্রতিটি কাজের ছোটো ছোটো সময়সীমা নির্ধারন। এই কৌশলটি প্রায়শই দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে যার সাহায্যে আপনি য়াপনার কাজগুলি সফলভাবে শেষ করতে সক্ষম হবেন।

কাজের চাপ কমাতে কৌশলী হোন

কাজের চাপ কমাতে বই পড়া, মেডিটেশন করা, গান শোনা বা ইয়োগা করার কৌশলগুলি অনুশীলন করুন। এই কৌশলগুলি আপনার শারীরিক, মানসিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ভালো প্রভাব ফেলবে এবং এটি আপনার কর্মক্ষেত্রের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এই কৌশলগুলি আপনাকেএমন চাপের সাথে লড়াই করতে সহায়তা করবে।

 
লেখকঃ মোঃ আশরাফুল মাখলুকাত  
অ্যাসিস্টেন্ট এক্সিকিউটিভ, এএইচআর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ইমেইলঃ ashrafulcuhrm@gmail.com





মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০

নিজেকে প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্রহনযোগ্য করে তুলুন

 বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে আপনি এমন লোকেদের দেখতে পাবেন যারা একই সাথে একই পদে নিয়োগ পান, তবুও তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি নেতৃত্ব দেন, অন্যরা পিছিয়ে থাকেন। এই নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিরা তাদের আশ্চর্যজনক কাজ করার ক্ষমতা এবং তাদের নম্র আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় স্থান অর্জন করেন।

এই বিষয়ে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা বলেন, 

"মাইক্রোসফটে যোগ দিয়েছি ১৯৯২ সালে। সব সময় ভেবেছি, আমি একটা দারূণ কাজ করছি, হতে পারে এটাই আমার শেষ কর্মস্থল, প্রতিদিন একই রকম কৌতূহল, শক্তি, শেখার আগ্রহ নিয়ে দিন শুরু করার মানসিকতা সম্ভবত আমার সহজাত মানুষ যখন উপদেশ চায়, সবসময় বলি তোমার সেরাটা দেওয়ার জন্য পরের চাকরির জন্য অপেক্ষা করো না, এখন যা করছ, সেখানেই সেরাটা দাও।"

নিজেকে প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্রহনযোগ্য করার কিছু পরামর্শ আমরা জেনে নিচ্ছি। 


সৃজনশীল চিন্তা করুনঃ

কোনো প্রতিষ্ঠানকে আপনার সঠিক মূল্য বুঝানোর সবচেয়ে বড় উপায় হলো কিছু সৃজনশীল,মৌলিক ধারণা বা আইডিয়া দেওয়া যা প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে অবদান রাখে।  প্রতিষ্ঠানকে নতুন এবং সৃষ্টিশীল  আইডিয়া  দিন যেটা সম্পর্কে  পূর্বে কখনো আলোচনাও হয়নি এবং যেটা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।  প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রকল্প সম্পর্কে আপনার মতামত প্রকাশ করতে দ্বিধা করবেন না।কোনো বিষয়ে আপনার মতবিরোধ থাকতেই পারে, তবে আপনি সেটিকে সঠিক পদ্ধতিতে উপস্থাপন করবেন।



নতুন দক্ষতা শেখার চেষ্টা করুনঃ

একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মীগণ সর্বদা তাদের কাজের ক্ষেত্রে শীর্ষে থাকতে নতুন নতুন স্কিল শিখে রাখে। যেটা তাদেরকে পরিণত কর্মীতে রুপান্তর করে । নতুন দক্ষতা শিখতে তাদের আগ্রহ আছে কারণ তারা জানে যে সেরা বিনিয়োগ হচ্ছে নিজের দক্ষতা বাড়ানো।

সুতরাং, প্রতিষ্ঠানের কাছে নিজেকে একটি মূল্যবান সম্পদ রুপে তুলে ধরার জন্য জন্য, আপনাকে কখনই নতুন স্কিল শেখা থেকে বিরত থাকা উচিত নয়।এমন অনেক নতুন দক্ষতা রয়েছে যা আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে সহায়তা করবে, যেমন হতে পারে নতুন প্রোগ্রামিং ভাষা, বা হতে পারে একটি নতুন প্রযুক্তি শেখা। কোনো নতুন দক্ষতা শেখার জন্য কিছু অর্থ ব্যয় করতে কখনও দ্বিধা করবেন না। এটি এমন একটি বিনিয়োগ যা আপনার ক্যারিয়ারে অদূর ভবিষ্যতে এটির ফল পাবেন।


অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও বিনয়ী হওয়াঃ

কাজে প্রতিযোগিতামূলক হওয়া এবং লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে কাজ করা খুব ভালো তবে আপনার মধ্যে যদি অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা, সহানুভূতিশীলতা এবং মানবিক গুণাবলীর ঘাটতি থাকে - তবে আপনার অন্যসব ভালো কাজের গুরুত্ব থাকে না।

কোনো কোম্পানির একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের সব থেকে ছোট পদে কাজ করা কর্মী প্রতি শ্রদ্ধা ও সৌজন্য দেখানো তার চরিত্রের কথা বলে। ভালো ব্যবহার শুধুমাত্র আপনাকে ভালো কর্মী হিসেবে প্রতিষ্টিত করেই না, বরং একজন ব্যক্তি হিসেবেও আপনাকে অন্যের কাছে পছন্দনীয় করে তোলে। সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিগণ সবসময় অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বিনয়ী হয়।

অন্যকে সাহায্য করুনঃ

আপনি নিজেকে প্রতিষ্ঠানের সম্পদ হিসেবে দেখানোর জন্য  আপনার সহকর্মীদের প্রতি অবহেলা করবেন না। তাদের প্রতিও সহনশীল হওয়া ব্যঞ্জনীয়। কখনও কখনও, শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সাফল্য প্রকৃত বিজয় হিসেবে গন্য হয় না । নিজের কাজের সাফলাতার পাশাপাশি আপনার সহায়তায়  যদি অন্যরাও সফল হয় সেটা আপনাকে আরো যোগ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে এবং আত্মতুষ্টি দিবে।

সফল কর্মীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণ হলো তারা টিম প্লেয়ার হিসেবে কাজ করেন। অন্যকে সাহায্য করার জন্য তারা কখনো ভয় পান না।অন্যকে সাহায্য করার মাধ্যমে আপনি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন যা কর্মক্ষেত্রে আপনার সাফল্যের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয়।

অন্যের মতামতকে সম্মান করুনঃ

আমরা সকলেই আমাদের নিজ নিজ ক্যারিয়ারে কমপক্ষে এক দুবার ভুল করে থাকি। এটি সম্পূর্ণরূপে ঠিক আছে এবং ভুল করা গ্রহণযোগ্য। সামগ্রিকভাবে, আমরা ভুল থেকে সঠিক কাজগুলি করতে শিখি।কেউ যদি আপনার কোনো কাজ পছন্দ না করেন, তাহলে তার মতামতকে গুরুত্ব দিন যদি আপনার কোনো বিষয়ে ঘটতি থাকে সেটি দ্রুত শুধরে নিন।

সফল কর্মীরা তাদের ভুলগুলি থেকে শিখেন এবং সবসময় গঠনমূলক মতামত গ্রহন করে থাকেন। তারা এটিকে ব্যক্তিগতভাবে কখনই নেন না, বরং তারা এটিকে নিজেদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করেন।

কথা নয়, কাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুনঃ

সফল কর্মীরা নিঃশব্দে কঠোর পরিশ্রম করে এবং তাদের সাফল্যই তাদের পক্ষে কথা বলে। তারা কখনো নিজের যোগ্যতার কথা প্রচার করেন না , তাদের কাজের দক্ষতা তাদেরকে অন্যের কাছে গ্রহনযোগ্য করে তোলে। তারা অন্যদের সাথে ইদুর দৌড়ে সামিল করেন না এবং নিজের ফলাফল অন্যের সাথে তুলনা করেন না। তারা নিজেকে পূর্বের স্থান থেকে কতোটুকু উন্নতি করতে পারলেন সেটার উপর গুরুত্ব দেন।


প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পারফর্ম করুনঃ

এটি সম্ভবত এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা সাধারন কর্মীর মধ্য থেকে সেরা কর্মীকে স্পষ্টভাবে আলাদা করে দেয়। প্রতিষ্ঠানের একটি সম্পদ হওয়ার জন্য সর্বদা আপনাকে প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পারফর্ম করতে হবে। আন্ডারপ্রোমাইজ এবং ওভারডেলিভার। সর্বদা যে অতিরিক্ত মাইল যেতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইন আপনার প্রতিষ্ঠান আপনাকে একটি লোগো প্রস্তুত করার দায়িত্ব দিলো। আপনি শুধুমাত্র ১ টা লোগো প্রস্তুত না করে যদি আরো ৪/৫ টা ডিজাইন আপনার সুপারভাইজর বা বসকে দেখান  তাহলে সে আরো বেশি খুশি হবে এবং সেখান থেকে প্রতিষ্ঠান সঠিক ডিজাইন নির্বাচন করতে অনেকগুলো অপশন পাবে।

(আপনি যদি নিজেকে নিজের প্রতিষ্ঠানের গ্রহনযোগ্য এবং মূল্যবান সম্পদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে আগ্রহী হন, তবে আমি নিশ্চিত যে উপরে বর্ণিত পরামর্গুশলি আপনার পক্ষে সহায়ক হবে।)


লেখকঃ মোঃ আশরাফুল মাখলুকাত   
অ্যাসিস্টেন্ট এক্সিকিউটিভ, এএইচআর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ইমেইলঃ ashrafulcuhrm@gmail.com
(এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত সব ছবিই  সংগৃহীত ও প্রতিকী অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে)

 




বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর, ২০২০

কীভাবে কাজে মনসংযোগ বাড়াবেন? (শেষ পর্ব)


প্রতিদিন অপরিকল্পিতভাবে নানা কাজ করে থাকি।  আর এ কাজগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক সঠিকভাবে করা হয় না। দিনশেষে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনি একরাশ অসমাপ্ত কাজের হতাশা নিয়েই বিছানায় ঘুমাতে যান। এভাবেই আরো একটি দিন আপনার জীবন থেকে চলে যায় এবং আবারো পরের দিন সে অপূর্ণ কাজটি করার মন্ত্রে নিজেকে দীক্ষিত করে নিজেকে দেন সান্ত্বনা। গত দুই পর্বে আমরা জেনেছি নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির এবং সময়ের সুষ্ঠু ব্যবহার করে আমরা কাজে মনসংযোগধরে রাখতে পারি। আজ লেখাটির শেষ পর্বে চলে এসেছি, আজ আমারা জানবো কাজের সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং কাজে মনযোগ ধরে রাখার পদ্ধতিগুলো দীর্ঘমেয়াদী  অভ্যাসে পরিণত করার মাধ্যমেআমরা কাজে কীভাবে মনসংযোগ ধরে রাখতে পারি ।





আপনার ডেস্ক পরিষ্কার রাখুন
আপনার কাজের স্থান  যদি অগোছালো এবং বিশৃঙ্খলাযুক্ত হয় তাহলে নিজের কজে মনোনিবেশ করা কঠিন। আপনার ডেক্সকে সুসজ্জিত কারার জন্য অফিস ডিউটির প্রতিদিনের শেষ ১৫ মিনিট ব্যয় করুন। আপনার ডেস্কের অপ্রয়োজনীয় কাগজ বা আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলতে পারেন । আপনার কম্পিউটারে অতিরিক্ত খোলা  ফাইলগুলো উইন্ডোগুলি ক্লজ করুন। এটি আপনাকেপ্রতিটি দিন নতুন করে শুরু করতে সহায়তা করবে।



কাজের শুরুতে মেডিটেশন করুন
আপনার ডেস্কে বসুন। আপনার চোখ বন্ধ করুন এবং কয়েকটি গভীর শ্বাস নিন। এমন একটি চিন্তার প্রতি মনোনিবেশ করুন যা আপনাকে খুশি করে, যেমন কোনও সৈকতে শিথিল হওয়াতে বসে আছেন বা কোনও ভাল বই পড়ছেন। পুরোদিনে অনুশীলনটি মোট ১০ মিনিটের জন্য করতে পারেন। 


রুমের তাপমাত্রা সহনীয় রাখুন
কাজের পরিবেশের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা হ'ল ৭১ ডিগ্রি ফারেনহাইট (২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। যদি আপনি এটি ঠিক রাখতে না পারেন তবে ৬৮-৭৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট (২০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। যদি তাপমাত্রা খুব বেশি হয় তবে আপনি অতিরিক্ত গরমে  কাজের থেকে মনযোগ হারাবেন। যদি তাপমাত্রা খুব কম হয় তবে আপনি চটজলদি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।



আরামদায়ক চেয়ারে বসুন
একটি আরামদায়ক চেয়ার কাজে মনোনিবেশ করা আরও সহজ করতে সহায়তা  করে । লক্ষ্য রাখুন আপনার ডেস্ক চেয়ার যেন আপনার পিঠকে  সাপোর্ট করে । এছাড়াও, নিশ্চিত করুন আপনার বসার চেয়ারটি আপনার ডেস্কের উপযুক্ত উচ্চতার হয়।

বিরতিতে এবং অফিস ত্যাগের সময় আপনার কম্পিউটার বন্ধ করুন
আপনার বিরতির সময়, বা অন্য কোনো কাজে যখন  আপনার ডেস্ক ত্যাগ করতে হয় তখন আপনার কম্পিউটারটি লক করে রাখুন। তাহলে আপনি আপনার মনসংযোগ অন্য কাজে দিতে পারবেন। এবং অফিস ত্যাগের পূর্বে অবশ্যই কম্পিউটার বন্ধ রাখুন।


ডেস্কে ছোট গাছ রাখুন
আপনার ডেস্কে ছোট গাছ রাখুন  অথবা  রুমে  জায়োগা থাকলে বড় গাছ রাখুন। আপনার রুমে জানালা না থাকে তাহলে এমন গাছ রাখতে পারেন যে গাছ অল্প আলোতে বেঁচে থাকে।গাছটি বাতাস সরবরাহ করবে যা আপনার মনকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করবে।



ক্যালেন্ডার সংরক্ষণ করুন
আপনার নিজের মোবাইলে অথবা ডেস্কে ক্যালেন্ডার পদ্ধতি চালু রাখুন । প্রতিদিন সকালে আপনি ক্যালেন্ডার ফলো করুন এতে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো মনে রাখা সহজ হবে।


স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখুন  
নিয়মিত অনুশীলন করুন এবং আপনার শরীরের ভাল যত্ন নিন এবং সকালে অনুশীলন করলে আপনার মনসংযোগ বৃদ্ধি করবে। সুষম খাবার খাবেন। ধূমপান এবং মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। এই সমস্ত     অভ্যাস আপনাকে কাজে উত্সাহিত করবে এবং উত্পাদনশীলতা বাড়িয়ে তুলবে।  আপনার মনসংযোগ ধরে রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমানো দরকার এটি কর্মক্ষেত্রে একাগ্রতার উন্নতি করবে।


সংগঠিত লোকদের সাথে কাজ করুন
এটি সর্বদা সম্ভব নাও হতে পারে তবে আপনি যদি পারেন তবে যারা নৈতিকভাবে সংগঠিত তাদের সাথে কাজ করুন । আপনি অলসবোধ করলে তারা আপনাকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারে। এটি আপনাকে দলীয়ভাবে কাজ করতে সহয়তা করবে এবং সম্মিলিত লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হবে।


আপনি অলসবোধ করলে তারা আপনাকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারে। এটি আপনাকে দলীয়ভাবে কাজ করতে সহয়তা করবে এবং সম্মিলিত লক্ষ্য অর্জন করা সহজ হবে।

            -শেষ পর্ব-


লেখকঃ মোঃ আশরাফুল মাখলুকাত   
অ্যাসিস্টেন্ট এক্সিকিউটিভ, এএইচআর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ইমেইলঃ ashrafulcuhrm@gmail.com
(এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত সব ছবিই  সংগৃহীত ও প্রতিকী অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে)



সোমবার, ২৭ জুলাই, ২০২০

কীভাবে কাজে মনসংযোগ বাড়াবেন? (২য় পর্ব)



আমরা ১ম পর্বে জেনেছি একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে মনযোগ স্থির করার মাধ্যমে কীভাবে কাজে   মনসংযোগ বাড়াতে পারি। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে মনযোগ স্থির করার উপায় সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছিল। আমরা সময়ের সুষম বন্টনের মাধ্যমে কঠিন ও চ্যলেঞ্জিং কাজগুলো সহজে করতে পারবো । আমরা জানি সময় এবং নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা না । আর সেই সময়কে সুষম বন্টনের মাধ্যমে আমাদের কাজের প্রতি মনযোগ বাড়াতে পারি। আজ আমরা জানবো সময়ের সুষ্ঠু বন্টনের মাধ্যমে কিভাবে কাজে মন সংযোগ বাড়াতে পারি।


১. চ্যালেঞ্জিং কাজ দিয়ে দিন শুরু করুনঃ


কার্যদিবসের শুরুতে আমরা মানসিক এবং শারীরিক দিক থেকে  সম্ভবত সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী থাকি, সুতরাং অতিরিক্ত মানসিক পরিশ্রমের কাজগুলো দিয়ে দিন শুরু করুন ।দিনের শুরুতেই নতুন বা সৃজনশীল কাজ করতে পারেন । সৃজনশীল কাজগুলোতে আপনার উচ্চমাত্রার মনসংযোগ করার প্রয়োজন হয়। দিনের শুরুতে আমাদের যেকোনো বিষয়ে মনঃসংযোগ করা সহজ হয়। যখন দেখবেন আপনি জটিল কাজ করে হাঁপিয়ে যাচ্ছেন তখন আপনার দিনের বেসিক কাজ করতে থাকুন। দিনের শেষ ভাগে জটিল কাজ করা এড়িয়ে চলুন।সুন্দর ভাবে দিনের কাজগুলো শেষ করুন পরবর্তি দিন ঝাঁপিয়ে পড়ুন নতুন উদ্দমে ।

২. এক সময়ে শুধু একটি কাজেই ফোকাস করুনঃ

মাল্টিটাস্কিং, বা একটি কাজ থেকে অন্যকাজে মনোনিবেশ করা এবং একবারে অনেকগুলি কাজ করার চেষ্টা করা,  এতে আপনার কাজ করার শক্তি দ্রুত  কমতে শুরু করবে ।  একাধিক কাজ এক সময়ে কারার পরিবর্তে, একটি নির্দিষ্ট কাজ বেছে নিন এবং এটি সমাপ্তিতে মনোনিবেশ করুন। এই কাজটিকে নিখুঁত করে তুলুন। কেবল এটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করুন এবং  কাজটি শেষ হলে পরে  অন্যকাজে হাত দিন। এরফলে আপনার কাজে ভুল কম হবে এবং মানসিক প্রশান্তি বাড়বে। এছাড়াও আপনার যদি একটি বড় কাজে মনোযোগের প্রয়োজন হয় তবে সেই কাজটি কীভাবে ছোট ছোট ভাগে ভাগ  করা যেতে পারে তা নিয়ে পরিকল্পনা করুন। তারপরে, প্রথমে কোন কাজগুলি সম্পন্ন করতে হবে তার সিদ্ধান্ত নিন এবং কাজ শুরু করুন।

৩. কাজের সেরা সময় নির্বাচন করুনঃ

প্রত্যেক ব্যক্তির পুরো দিনের মধ্য কয়েক ঘন্টা থাকে যার মধ্যে তারা সাধারণত সর্বোত্তমভাবে কাজ করে। এক সপ্তাহের জন্য, এমন একটি চার্ট রাখুন যেখানে আপনি প্রতি ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ শক্তির স্তরটি লিখে রাখেন। তারপরে, আপনার শক্তি এবং উত্পাদনশীলতার শীর্ষগুলি কোথায় রয়েছে তা দেখতে তালিকাতে চোখ বুলিয়ে নিন । ভবিষ্যতে, এই নির্দিষ্ট ঘন্টাগুলি আপনার সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং কাজে ব্যয় করুন ।উদাহরণস্বরূপ, অনেক লোক দেখতে পান যে তারা সকাল ৯ টা থেকে ১১ টার মধ্যে সবচেয়ে ভাল কাজ করে এবং দুপুরে খাওয়ার পরে তাদের  কাজের গতি ধীরে হতে থাকে। দুপুরে খাওয়ার পরে কম পরিশ্রমের কাজগুলো শুরু করুন এবং পরবর্তি দিন সকালে আরও কঠোর পরিশ্রম শুরু করুন।আপনার সহকর্মীদের জন্য এটি পরিষ্কার করুন যে আপনি জরুরি না হলে আপনার কাজের সর্বোত্তম সময়ের মধ্যে আপনাকে যাতে বিরক্ত না করে।



৪. নিজস্ব সময়সীমা সেট করুন:

সম্ভবত আপনার বস বা নিয়োগকর্তা যখন আপনাকে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট দিবেন তখন সেটা সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সময় দিবে্ন। তবে, বিলম্ব এড়াতে এবং কাজে মনোনিবেশ বাড়াতে প্রতিটি কাজের জন্য আপনার নিজস্ব সময়সীমা তৈরি করুন। এটি অনুসরন করলে প্রতিটি কাজ শেষ করার জন্য  যথেষ্ট সময় পাবেন। আপনি যদি বেঁধে সময়ের আগেই কোনো নির্দিষ্ট কাজ শেষ করতে পারেন তাহলে অপেক্ষাকৃত জটিল কাজগুলো শেষ করার জন্য যথেষ্ট সময় পাবেন।


উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি রবিবারে অফিসে  উপস্থিত হওয়ার পরে  আপনার বস  আপনাকে একটি কাজ দিলেন এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে কাজটি শেষ করার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দিলেন, এরপর আপনি কাজটিকে ৩ ভাগে ভাগ করে নিলেন ।আপনি সোমবার প্রকল্পের ১ম ভাগের কাজ করলেন, মঙ্গলবার ২য় ভাগ এবং বুধবার শেষ অংশের কাজ করার করতে ব্যক্তিগত সময়সীমা নির্ধারণ করতে পারেন, তারপরে প্রুফরিড এবং সংশোধন করতে বৃহস্পতিবারটি ব্যবহার করুন।

চলবে............

লেখকঃ মোঃ আশরাফুল মাখলুকাত   
অ্যাসিস্টেন্ট এক্সিকিউটিভ, এএইচআর
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ইমেইলঃ
ashrafulcuhrm@gmail.com
(এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত সব ছবিই
  সংগৃহীত ও প্রতিকী অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে)






বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০

কীভাবে কাজে মনসংযোগ বাড়াবেন ? (১ম পর্ব)

একটি সাধারণ কাজের দিনে আমাদের কিছু কারণে  মনোযোগ হারাতে পারে এবং কাজের প্রতি মনোনিবেশ করা কঠিন হয়ে যায় । এটি থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য আপনি প্রতিটি কাজে আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে চাইবেন। সংগীত শুনে বা চুইংগাম চিবানো সহ সাধারণ কৌশলগুলি ব্যবহার করে আপনি আপনার দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে পারেন। কাজের ক্ষেত্রে আপনার মনসংযোগ বৃদ্ধি করার জন্য আরও দীর্ঘমেয়াদী উপায়গুলির   অনুসরণ করতে পারেন, আপনার ডেক্স সুশৃঙ্খলভাবে সাজিয়ে রাখতে পারেন এবং আপনার ফোনে এবং কম্পিউটারে অপ্রয়োজনীয় সময় কাটানো থেকে বিরত থাকুন।



আপনার মনযোগ নির্দিষ্ট লক্ষ্যে স্থির করুনঃ

আপনার মনযোগ নির্দিষ্ট লক্ষ্যে স্থির করার জন্য কিছু উপায় অবলম্বন করতে পারেন।

ü একটু বিরতি নিয়ে গান শুনুনঃ

আপনার ডেস্কে একজোড়া হেডফোন রাখুন এবং ১০ মিনিটের জন্য বিরতি নিন। আপনি যখন গান শুনছেন, আপনার মন থেকে সমস্ত কাজ সম্পর্কিত চিন্তাগুলি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন, কয়েকটি গভীর শ্বাস নিন এবং গান শুনুন। তারপরে, আপনার বিরতি শেষ হয়ে গেলে আবার কাজে ডুব দিন।



ü প্রতিটি কাজের নোট রাখুনঃ

আপনি যদি কোনো মিটিং বা কথোপকথনে মনোযোগ হারাতে থাকেন তবে আপনার ফোকাসকে
তীক্ষ্ণ করার জন্য বক্তার কথাবার্তা  নোট করতে পারেন । অনুমতিক্রমে আপনি মিটিং রেকর্ড করতে পারেন
এবং তারপরে রেফারেন্সের জন্য রেকর্ডটি পুনরায় চালু করে শুনতে পারেন।



ü গুরুত্বপূর্ণ কাজের সময় প্রয়োজন বুঝে ফোন বন্ধ রাখুনঃ

আপনি যখন কাজে ব্যস্ত থাকবেন তখন আপনার ফোনটি একটি বদ্ধ করে ড্রয়ারের মধ্যে রাখুন। অথবা, ফোন সাইলেন্ট মুড বা ভাইব্রেট মুড অন করেআপনার ডেস্কে ড্র্যয়ারে রাখতে পারেন। বিরতিতে আপনার ফোনটি চেক করুন। আপনার ফোনের স্কিন প্রায়শই চেক করা থেকে বিরত থাকুন এতে কাজে বিভ্রান্তি তৈরী হবে।





ü পাঁচ মিনিটের বিরতি নিনঃ

ঘড়িটি দেখুন এবং প্রতি ১ ঘণ্টা টানা কাজের জন্য পাঁচ মিনিটের বিরতি নিন। আপনি রিফ্রেশমেট রুমে যেতে পারেন, অফিসের চারপাশে হাঁটতে পারেন, অল্প জলখাবার খেতে  পারেন, এমনকি দাঁড়িয়ে এবং শরীরের কিছু ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করতে পারেন। এই নির্দিষ্ট বিরতির সময়গুলি আপনাকে কাজের প্রতি মনযোগ ধরে রাখতে এবং কাজ করার সময় আপনাকে আরো কাজের প্রতি ফোকাস ধরে রাখতে সাহায্য করবে । 


ü চুইংগাম চিবানো বা পিপারমিন্ট খেতে পারেনঃ

আপনি যদি  মনে করেন আপনার মনঃ সংযোগ ব্যহত হচ্ছে তাহলে চুইংগাম চিবাতে পারেন।আপনার কাছে যদি কোনো চুইংগাম না থাকে তবে একটি পেপারমিন্ট ক্যান্ডি মুখে রাখতে পারেন। 

 চুইংগাম এবং পেপারমিন্ট ক্যান্ডি উভয়ই চ্যালেঞ্জিং কাজ করতে ব্যক্তির মনঃ সংযোগ ধরে রাখার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। এছাড়াও যদি আপনি গোলমরিচ চিবান এটা আপনার মানসিক এবং শারীরিক উপকার করবে।

চলবে......


লেখকঃ মোঃ আশরাফুল মাখলুকাত, অ্যাসিস্টেন্ট এক্সিকিউটিভ-এএইচআর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ইমেইলঃ ashrafulcuhrm@gmail.com

(এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত সব ছবিই  সংগ্রহিত ও প্রতিকী অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে)